রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভার হাটবাজার ও মহাল ইজারার প্রক্রিয়া সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ‘ডামি দরদাতা’ ব্যবহার করে বেশি দরপত্র কিনলেও জমা দিয়েছেন হাতে গোনা কয়েকটি। সেখানে সমঝোতা করে তারা অল্প টাকায় ইজারা বাগিয়ে নিয়ে এখন বেশি টাকায় এর অংশ বিক্রি করার পাঁয়তারা করছেন।
এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
জানা যায়, রামগতি পৌরসভার অধীন আলেকজান্ডার, জমিদারহাট, নুরিয়া হাজিরহাট, আশ্রম বাজারসহ চারটি বড় বাজার রয়েছে। ইজারার জন্য এসব বাজারের গরু, মাছ, মোরগ বাজারসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পৌর প্রশাসক সৈয়দ আমজাদ হোসেনের স্বাক্ষরে বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য হাটবাজার ও বিভিন্ন মহাল ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।
এতে ১১টি হাটবাজার, বাস, ট্রাক, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটো ও হোন্ডা, ব্যাটারিচালিত রিকশার ৫টি মহাল এবং দুইটি পাবলিক টয়লেটের জন্য ৭০টি দরপত্র বিক্রি হয়। রহস্যজনক কারণে জমা পড়ে মাত্র ৪৮টি। নাম প্রকাশ না করা সর্তে কয়েকজন দরদাতা জানান তাদের দরপত্র জমা দিতে দেননি। এসব হাটবাজারগুলোর গত তিন বছরের গড় মূল্য হিসাব করে ইজারা মূল্য নির্ধাণ করেছে পৌরসভা। যা বিজ্ঞপ্তিতে দেখানো হয়।
দরদাতারা সিন্ডিকেট করে ইজারামূল্য বাড়তে দেয়া হয়নি।
পৌর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলা ১৪৩২ সনের জন্য হাটবাজার ও বিভিন্ন মহাল ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। প্রত্যেকটি হাটবাজার এবং মহালের জন্য দরপত্র বিক্রি করা হয়। ১৩ মার্চ ছিল দরপত্র দাখিল করার শেষ দিন এবং ওই দিনই বিকেল ৩টার দিকে দরপত্র বাক্স খোলা হয়। এতে দেখা যায়, দরদাতাগণ প্রতিটি হাটবাজার ও মহালের জন্য তিনটি করে দরপত্র জমা দেন এবং নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি মূল্যে দরপত্র জমা দেন। কোনো কোনো শ্রেণিতে নির্ধারিত মূল্যের ছেয়ে কমও রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার সদর আলেকজান্ডার বাজার। বাজারটির গত তিন বছরের গড়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ লক্ষ্য ২২ হাজার ৫৭০ টাকা। এই বাজারটির ইজারার জন্য ৫টি দরপত্র বিক্রি হলেও তিনটি জমা পড়ে। এর মধ্যে দু’টিতে কোনো পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট নেই। এ বাজারটি গড় মূল্যের চেয়ে মাত্র ১ হাজার ৪০০ টাকা বেশিতে ইজারা পান পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সুজা মিয়ার ছেলে মো. আলী আকবর।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সিন্ডিকেট করে হাট-বাজারের ইজারামূল্য বাড়তে দেয়া হয়নি। সমঝোতা করে তারা অল্প টাকায় ইজারা বাগিয়ে নিয়ে এখন বেশি টাকায় এর অংশ বিক্রি করার পাঁয়তারা করছেন। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
পৌর প্রশাসক সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, সরকারি মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে ইজারা দেয়ার সুযোগ নেই। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং পৌর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে টেন্ডার কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
